সমাজসেবী না অর্থভোগী?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুললেই এখন দেখা যায় মানুষ শুধু দান আর দান করছে। আরো লিখছে এদেরকে সহযোগিতা করতে চাইলে আপনিও করতে পারেন নিচের নাম্বারে টাকা পাঠিয়ে। তো সমস্যাটা কোথায়?

সম্প্রতি বিদ্যানন্দ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। অনেকেই প্রমাণসহ দেখাচ্ছেন বিদ্যানন্দ সাধারণ মানুষের দানের টাকা নিজেরা আত্মসাৎ করছে। প্রমাণগুলো গভীর দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করে আপাতদৃষ্টিতে আমার কাছেও এখানে প্রতারণার গন্ধ লাগছে। তবে শুধু বিদ্যানন্দ কেন? এখনকার বেশিরভাগ সমাজসেবী সংগঠনের কাজকর্মের একটা বড় অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেগী ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা। জনগনের দানের টাকা দিয়ে সেগুলোর বিজ্ঞাপন দেওয়া ও সেখান থেকে আবার দান সংগ্রহ করা। আবার উচ্চ বেতনের কর্মচারী রাখা, ৫ তারকা হোটেলে মিটিং করা, সংগঠনের নামে জমি কেনা। শেষে যদি কিছু টাকা বাকি থাকে সেটা ঐ ছবি তুলতে হবে না তার জন্য দান-দক্ষিণায় বিতরণ করা। আজকাল অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছে যে স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরাও সমাজ সংগঠন খুলে ফেইসবুকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছে, খবরের শিরোনাম হচ্ছে আর যদি সময় পায় দান-দক্ষিণা করছে, এরকম শত শত উদাহরণ আমি দেখাতে পারবো। এদের মূল উদ্দেশ্য একটা নয়, অনেকগুলো।

প্রথমত পাবলিসিটি দেখাতে হবে। এটা যদি পেয়ে যায় এদের আর পায় কে। দ্বিতীয়ত অর্থ। এদের কত টাকা জমা হলো, কত টাকা বিতরণ হলো আর কত টাকা সংস্থা পরিচালনার পেছনে চলে গেলো তার কোনো প্রকার অডিট না এরা প্রকাশ করে না কাউকে করতে দেয়।

আপনার যদি মনে হয় যে আপনার যথেষ্ট সামর্থ্য আছে মানুষকে দান করার, যা অত্যন্ত ভালো কথা, অবশ্যই করবেন। এরজন্য আপনাকে এদের মতো অর্থভোগীদের কাছে যেতে হবে না। আপনি একটু কষ্ট করে রাস্তায় যান আমি সত্যি বলছি, আপনার দানের টাকা শেষ হয়ে যাবে কিন্তু হাত শেষ হবে না। আমাদের সমস্যাটা হয়ে গিয়েছে কি সবকিছু হোম ডেলিভারি পেতে পেতে এইটাও এই নিয়মে আনতে চাই। কিন্তু দান-দক্ষিণার মধ্যে হোম ডেলিভারি প্রণয়ন করতে গেলে অনেক ছিদ্রের সৃষ্টি হবে। যা টেপ পেঁচিয়েও ঢাকা যাবে না।

এই প্রবন্ধটি শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন