আজ থেকে মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ বছর আগেও রাজা-মহারাজা ও ধনী ব্যক্তিরা নর্তকীদের মুজরা দেখার জন্য অঢেল টাকা-সোনাদানা ব্যয় করতেন আর এখন একটা স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট সংযোগ হলেই চলে, সোশ্যাল মিডিয়ার সুবাধে মুজরা বিনামূল্যেই আপনার চোখের সামনে চলে আসবে।
এখন ইন্সটাগ্রাম, ফেসবুকে উঠতি বয়সের মেয়েরা ভাইরাল হওয়ার জন্য যেসব ছবি ও ভিডিও পাব্লিক প্লাটফর্মে প্রকাশ করছে তাতে আপনার টাকা থাকুক আর না থাকুক আপনার জন্য সেই রাজা-মহারাজাদের মুজরা অতি সহজ হয়ে গেছে দেখা। এই সত্য আপনি চাইলেও বদলাতে পারবেন না যে আমাদের সমাজ পুরুষ-শাসিত সমাজ। এর মানে এই নয় যে নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক কোনো ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা নেই। আমাদের সমাজ যদি একটি গাড়ি হয় তাহলে নারী ও পুরুষ হচ্ছে সেই গাড়ীর দুইটি চাকা। এক চাকায় যেমন গাড়ী চলে না তেমনি নারী ব্যতীত সমাজ চলবে না। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখনো দেখা যায়, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তারা পরিবারের পুরুষ সদস্যদের মতামত নিয়েই তবে কাজ করে নারীরা। পুরুষের চেয়ে নারীর কোনো খবর মানুষ বেশি মনোযোগ দিয়ে শোনে।
তো গাড়ীর একটি চাকা যদি টায়ার ছাড়া চলে সেটা কি গাড়ীর চালক কিংবা আশে পাশের মানুষের তা নজরে আসবে না? মানুষ কি সেটা কি কথা বলবে না? আর টায়ার ছাড়া গাড়ী কতক্ষণ চালাতে পারবেন সেটা বলতে পারবেন? আজকাল ইন্সটাগ্রাম এর ফিড ওপেন করলেই শুরু মেয়েদের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ও শরীর প্রদর্শনের ভিডিও বা ছবি। কারণ ভালো জিনিসের চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় খারাপ জিনিস ৫ গুন দ্রুত ছড়ায়। আর এই টেকনিকটাকেই একদল মানুষ ব্যবহার করছে। শরীর প্রদর্শন করে খ্যাতি পেয়ে হয়ে যাচ্ছে তারা ‘সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার‘। তাদের কাছে ভার্চুয়াল খ্যাতির দাম তাদের শরীরের চেয়ে অনেক বেশি। আচ্ছা আপনি বলতে পারবেন, যখন একটি নারীর তার শারীরিক সৌন্দর্যই বেঁচে উপার্জন বা খ্যতি পেতে হয় তখন তার পরিচয় কি হয়ে যায়?
লজ্জা ঈমানের অংশ
আল জামিউ বাইনাস সাহিহাইন, হাদিস: ১২৭৩
এটা মানুষ জেনে এসেছে। এর ব্যতিক্রম মানেই নারীর পরিচয়টাই বদলে যাবে। যারা এই শরীর প্রদর্শন করে একটি রিল বানিয়ে, একটি শর্ট ভিডিও বানিয়ে খ্যাতি পাচ্ছেন আসলে কি বুঝতে পারছেন আপনার ভিডিও যেসব মানুষ দেখে ভালো বলছে, সুন্দর বলছে আসলে তারা আপনার শারীরিক সৌন্দর্যের মোহে এসব বলছে। সোশ্যাল মিডিয়ার খ্যাতি আপনার সেদিন থেকে কমে যাবে এসবের কারণে যেদিন পূর্নাঙ্গ পোশাকের বেশ আপনার পরনে উঠবে। আর প্রকৃত সত্য এটাই যে, এটাই আসল নারীর আসল সৌন্দর্য। মানুষ ভালো জিনিস খেতে চায় না। কারণ তাদের কাছে দুধের চেয়ে মদ অতি সুস্বাদু । কিন্তু তাদের মন ও মস্তিষ্ক এটা জানে যে কি খাচ্ছে তারা। তাই আপনি যদি একজন নারী হন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনি মানুষকে কি দেখাচ্ছেন তা একবার ভেবে দেখুন। আপনার কন্টেন্ট কি আপনার নিজের মা-বাবা কে দেখাতে পারবেন ? যদি মনে হয় আপনার কন্টেন্ট আপনি শেয়ার করতে পারবেন আপনার পরিবারের সদস্যদের সাথে তাহলে আপনি চালিয়ে যান।